Saturday, August 15, 2015

অঘ্রাণ প্রান্তরে

অঘ্রাণ প্রান্তরে

‘জানি আমি তোমার দু’চোখ আজ আমাকে খোঁজে না আর পৃথিবীর’ পরে- 
বলে চুপে থামলাম, কেবলি অশত্থ পাতা পড়ে আছে ঘাসের ভিতরে 
শুকনো মিয়োনো ছেঁড়া;- অঘ্রান এসেছে আজ পৃথিবীর বনে; 
সে সবের ঢের আগে আমাদের দুজনের মনে 
হেমন্ত এসেছে তবু; বললে সে, ‘ঘাসের ওপরে সব বিছানো পাতার 
মুখে এই নিস্তব্ধতা কেমন যে-সন্ধ্যার আবছা অন্ধকার 
ছড়িয়ে পড়েছে জলে; কিছুক্ষণ অঘ্রাণের অস্পষ্ট জগতে 
হাঁটলাম, চিল উড়ে চলে গেছে-কুয়াশার প্রান্তরের পথে 
দু-একটা সজারুর আসা-যাওয়া; উচ্ছল কলার ঝড়ে উড়ে চুপে সন্ধ্যার বাতাসে 
লক্ষ্মীপেঁচা হিজলের ফাঁক দিয়ে বাবলার আঁধার গলিতে নেমে আসে; 
আমাদের জীবনের অনেক অতীত ব্যাপ্তি আজো যেন লেগে আছে বহতা পাখায় 
ঐ সব পাখিদের ঐ সব দূর দূর ধানক্ষেতে, ছাতকুড়োমাখা ক্লান্ত জামের শাখায়; 
নীলচে ঘাসের ফুলে ফড়িঙের হৃদয়ের মতো নীরবতা 
ছড়িয়ে রয়েছে এই প্রান্তরে বুকে আজ …… হেঁটে চলি….. আজ কোনো কথা 
নেই আর আমাদের; মাঠের কিনারে ঢের ঝরা ঝাউফল 
পড়ে আছে; খড়কুটো উড়ে এসে লেগে আছে শড়ির ভিতরে, 
সজনে পাতার গুঁড়ি চুলে বেঁধে গিয়ে নড়ে-চড়ে; 
পতঙ্গ পালক্‌ জল-চারি দিকে সূর্যের উজ্জ্বলতা নাশ; 
আলোয়ার মতো ওই ধানগুলো নড়ে শূন্যে কী রকম অবাধ আকাশ 
হয়ে যায়; সময়ও অপার-তাকে প্রেম আশা চেতনার কণা 
ধরে আছে বলে সে-ও সনাতন;-কিন্তু এই ব্যর্থ ধারণা 
সরিয়ে মেয়েটি তাঁর আঁচলের চোরাকাঁটা বেছে 
প্রান্তর নক্ষত্র নদী আকাশের থেকে সরে গেছে 
যেই স্পষ্ট নির্লিপ্তিতে-তাই-ই ঠিক;-ওখানে সিগ্ধ হয় সব। 
অপ্রেমে বা প্রেমে নয়- নিখিলের বৃক্ষ নিজ বিকাশে নীরব।

0 comments:

Post a Comment